ভ্রমণসর্বশেষ খবর

সেন্টমার্টিন: বাংলাদেশের স্বর্গের দ্বীপ | বিধিমালা সংশোধন ও মূসক প্রত্যাহারের দাবি

বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্ব কোণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপটি একটি দুর্দান্ত পর্যটন কেন্দ্র। এই ছোট দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাদা বালির সৈকত এবং স্বচ্ছ নীল জলের জন্য পরিচিত। সেন্টমার্টিনে আসা মানে প্রকৃতিতে একেবারে হারিয়ে যাওয়া। এই নিবন্ধে আমরা সেন্টমার্টিনের ইতিহাস, সংস্কৃতি, দর্শনীয় স্থান এবং ভ্রমণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করব।

সেন্টমার্টিনের ইতিহাস

সেন্টমার্টিন দ্বীপের নামকরণ সম্পর্কে একাধিক মতামত রয়েছে। অনেকের মতে, এটি ইংরেজি মিশনারি সেন্ট মার্টিনের নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছিল। এই দ্বীপটি কয়েকশ বছর ধরে স্থানীয় জেলেদের আশ্রয় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি ব্রিটিশ শাসনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল এবং এখানকার বাসিন্দারা বিভিন্ন ব্যবসা এবং কৃষিতে জড়িত ছিলেন। সেন্টমার্টিনের প্রধান বাসিন্দা হলেন মেহরাবাদি এবং মোরাং সম্প্রদায়। এখানকার লোকেরা খুব সাবধানে তাদের মাতৃভাষা এবং সংস্কৃতি রক্ষা করছেন। তাদের জীবন, খাওয়া এবং উত্সবগুলি এই অঞ্চলের বিভিন্ন সংস্কৃতির অংশ।

সেন্টমার্টিনের দর্শনীয় স্থান

1. সেন্টমার্টিনের বিচ

সেন্টমার্টিনের সাদা বালি সৈকতের প্রধান আকর্ষণ হ’ল এর প্রধান আকর্ষণ। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্যটি দেখার জন্য এখানে সত্যিই মন্ত্রমুগ্ধকর। সৈকতে হাঁটতে আপনি নীল সমুদ্রের শান্ত তরঙ্গ এবং লাল কাঁকড়ার খেলা দেখতে পাবেন।

Read More: Aerobic exercise : অ্যারোবিক ব্যায়ামের এই উপকারিতাগুলো জানেন?

2. সেন্টমার্টিনের প্রবালদ্বীপ

এই দ্বীপের চারপাশের প্রবাল দ্বীপগুলি ডাইভিং এবং স্নোর্কলিংয়ের জন্য আদর্শ জায়গা। রঙিন মাছ এবং বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী সহ স্বচ্ছ জলে সাঁতারের অভিজ্ঞতা এখানে সত্যিই লক্ষণীয়।

3. ঝিনুকের বাজার

বিভিন্ন ধরণের ঝিনুক এবং সামুদ্রিক পণ্য সেন্টমার্টিনের স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায়। এখানে আপনি স্থানীয় লোকদের কাছ থেকে হস্তনির্মিত উপকরণ কিনতে পারেন যা আপনাকে স্থানীয় সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করে তুলবে।

ভ্রমণের জন্য সময় ও করণীয়

সেন্টমার্টিনে ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত। এই সময়ে আবহাওয়া ঠান্ডা এবং শুষ্ক থাকে, যা ভ্রমণের জন্য আদর্শ। বর্ষাকালে (জুন-অগাস্ট) সেন্টমার্টিনে প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝড়ের সম্ভাবনা থাকে, তাই এ সময় ভ্রমণ না করাই ভালো।

কিভাবে আসবেন

সেন্টমার্টিনে যাওয়ার সর্বাধিক জনপ্রিয় উপায় হ’ল কক্সের বাজার থেকে লঞ্চ বা জাহাজে ভ্রমণ করা। কক্সের বাজারে পৌঁছে, সেখান থেকে আপনাকে লঞ্চের জন্য সরাসরি সেন্টমার্টিনের জন্য সরাসরি যাত্রা করতে হবে।

থাকার ব্যবস্থা

সেন্টমার্টিনে বিভিন্ন ধরণের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। হোটেল, রিসর্ট এবং কমপ্লেক্সে থাকার সুযোগ রয়েছে। স্থানীয় অতিথিরা খুব জনপ্রিয় এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে তাদের মধ্যে থাকাকালীন অভিজ্ঞ।

খাবার

সেন্টমার্টিনে স্থানীয় খাবারগুলিও উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি প্রিয় খাবারগুলিতে তাজা মাছ, ঝানকস এবং কাঁকড়া পেতে পারেন। মুরগী, চাল এবং স্থানীয় শাকসব্জির শর্তাদি পর্যটকদের মধ্যেও জনপ্রিয়।

সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য

সেন্টমার্টিন দ্বীপটি বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্ব কোণে অবস্থিত এবং এটি দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য অসাধারণ এবং এটি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী এবং উদ্ভিদের আবাসস্থল। নীচে সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে:

প্রাকৃতিক পরিবেশ

সেন্টমার্টিনের পরিবেশ অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অসাধারণ। দ্বীপটি মূলত সাদা বালির সৈকত, স্বচ্ছ নীল জল এবং গাছগুলিতে ভরা অঞ্চল দ্বারা বেষ্টিত। এখানে সরকার এবং স্থানীয় জনগণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে, যা দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক।

জলজ জীবন

বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণী সেন্ট মার্টিনের জলাশয়ে বাস করে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কাঁকড়া, ঝিনুক এবং প্রবালগুলি এখানে পাওয়া যায়। রঙিন মাছ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য দ্বীপের চারপাশে প্রবাল দ্বীপগুলিতে ডাইভিং এবং স্নোর্কলিংয়ের মাধ্যমে দেখা যায়। এই পরিবেশটি সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল।

Read More: Royal Enfield: প্রথম বৈদ্যুতিক বাইকটি কেমন?

টেরিস্ট্রি

দ্বীপে কিছু স্থল প্রজাতিও রয়েছে। দেশীয় গাছপালা এবং উদ্ভিদের কিছু প্রজাতি জীববৈচিত্র্যের অংশ, বিশেষত মানের। উদ্ভিদগুলি প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষায় সহায়ক এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য এবং শেড সরবরাহ করে।

উদ্ভিদ বৈচিত্র্য

সেন্ট মার্টিনে বিভিন্ন ধরণের গাছপালা রয়েছে, নারকেল গাছ, বাদাম গাছ এবং বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা সহ। এই গাছগুলি পরিবেশের সৌন্দর্য বাড়ায় এবং স্থানীয় প্রাণীদের আশ্রয় হিসাবে কাজ করে।

রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংরক্ষণ

স্থানীয় জনগণ এবং সরকার সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছে। পর্যটন শিল্পের বিকাশের সাথে সাথে পরিবেশের সচেতনতা ক্রমবর্ধমান এবং টেকসই পর্যটন প্রচেষ্টা বাড়ছে।

সেন্টমার্টিন নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশের দক্ষিণ -পূর্ব উপকূলে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সম্প্রতি বিভিন্ন নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলি মূলত দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ, পর্যটন শিল্প এবং স্থানীয় জনগণের জীবন উন্নয়নের জন্য নেওয়া হয়েছে। নীচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এবং তাদের প্রভাবগুলি আলোচনা করা হয়েছে:

1. পর্যটন নিয়ন্ত্রণ

সেন্ট মার্টিনে পর্যটকদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত পর্যটন দ্বীপের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্যের উপর চাপের মধ্যে রয়েছে। সুতরাং, কর্তৃপক্ষগুলি নির্ধারিত সংখ্যা অনুসারে পর্যটকদের দ্বীপে প্রবেশের অনুমতি দেবে, যাতে সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সুরক্ষিত থাকে।

2. নিষেধ এবং আইন

দ্বীপের পরিবেশ রক্ষা করতে এবং অবৈধ মৎস্য ও বাণিজ্যিক ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন কার্যকর করা হয়েছে। এই আইন অনুসারে, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের জন্য অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

3. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সরকার সেন্ট মার্টিনে একটি জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এই পরিকল্পনার অধীনে, দ্বীপের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং স্থানীয় জনগণের সচেতনতা উত্থাপিত হবে যাতে তারা পরিবেশগত পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে।

Read More: AI Server Hack করলে ১০ লাখ ডলার পুরস্কার দিচ্ছে Apple: কিভাবে করবেন?

4. স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ

উন্নয়ন প্রকল্পে স্থানীয় লোকদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্প তাদের মতামত এবং প্রয়োজনের ভিত্তিতে গৃহীত হবে, যাতে তারা তাদের জীবন উন্নত করতে পারে।

5. পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি

সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতনতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং টেকসই উন্নয়ন সম্পর্কিত শিক্ষামূলক কার্যক্রম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে।

সেন্টমার্টিন, বিধিমালা সংশোধন ও মূসক প্রত্যাহারের দাবি টোয়াবের

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (টিডব্লিউএবি), পর্যটন শিল্পের একটি শীর্ষস্থানীয় বাণিজ্য সংস্থা, নিষেধাজ্ঞাগুলি প্রত্যাহার, বিধি সংশোধন করে এবং পার্বত্য অঞ্চলে ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি করেছে।

নেতারা বলেছেন, সরকার ঘোষণা করেছে যে সেন্ট মার্টিনে পর্যটন পরিবহন পরিষ্কার -পরিচ্ছন্নতার জন্য আগামী ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয়ে যাবে। এটি পর্যটন শিল্পকে ব্যাপকভাবে ভোগ করবে এবং সাধারণ উদ্যোক্তারা নিশ্চিত হবেন। সেন্ট মার্টিনে প্রায় 3,000 মানুষ থাকেন। তারা সকলেই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল। সেন্ট মার্টিনে যদি পর্যটন বন্ধ থাকে তবে তারা সকলেই বেকার হয়ে উঠবে। একই সময়ে, উদ্যোক্তাদের আর্থিক বিনিয়োগ এখন ঝুঁকিতে থাকবে।

Read More: নবম শ্রেণির রেজিস্ট্রেশন শুরু ১ নভেম্বর : বয়স হতে হবে ১২ বছর, না হলে রেজিস্ট্রেশন নয়, বাড়ল ফি

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (ট্যাব) এর পরিচালক, ট্যুরিজম রিসর্ট ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, কক্সের বাজারের ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, সেন্টমার্টিনের দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন পরিবেশ ও পর্যটন সুরক্ষা জোট, সেন্ট মার্টিনের সমটিন হোটেল , সেন্টমার্টিন। মালিকদের সমিতির নেতারা, নৌকা মালিকদের সমবায় সমিতির নেতারা, মাল্টি -সোসাইটি মালিক অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিকদের সমিতির নেতৃবৃন্দ, শিপ মালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটরস অপারেটরস অপারেটরস অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (এসসিএবি) নেতাদের নেতারা এবং মুদ্রণ এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া উপস্থিত ছিল।

উপসংহার

সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের একটি অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান। এর প্রাকৃতিক দৃশ্য, সংস্কৃতি, এবং স্থানীয় জনগণের আন্তরিকতা পর্যটকদের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে। সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ মানে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হওয়া এবং জীবনের বিভিন্নতা উপভোগ করা। আশা করি, আপনি একবার হলেও সেন্টমার্টিনে যাওয়ার পরিকল্পনা করবেন এবং এর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হবেন।

Ajker News BD

আমরা প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা, বিনোদন, প্রযুক্তি এবং জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত সংবাদ পরিবেশন করে। আজকের নিউজ বিডি তার দ্রুত আপডেট এবং নির্ভরযোগ্য সংবাদ সরবরাহের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা পাঠকদেরকে সবসময় সঠিক এবং সময়োপযোগী তথ্য প্রদান করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button