শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নতুন তথ্য: রাজশাহীতে ৭২ দিন পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন
রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র সাকিব আঞ্জুমের লাশ ৭২ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার সকালে আদালতের নির্দেশে নগরীর টিকাপাড়া কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
লাশ উত্তোলনের সময় রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়ান ফারহান শামস, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান জানান, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর পুলিশ ও চিকিৎসকের অভাবে সাকিব আঞ্জুমের লাশ পোস্টমর্টেম ছাড়াই দাফন করা হয়। এ কারণে তদন্তকারী কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আদালতে আবেদন করলে আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করা হয়।
ময়নাতদন্ত শেষে একই কবরস্থানে দাফন করা হবে সাকিবের লাশ। সাকিব আঞ্জুম একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। তার মৃত্যুর ঘটনায় নিহতের বাবা মইনুল হক বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনসহ ৩৪২ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
প্রথমে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ তদন্ত করলেও পরে মামলার ভার নগর ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মশিয়ার রহমান বলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডা. সরকার, যুবলীগ নেতা রুবেলকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ডব্লিউ সরকারকে দুইবার ১৬ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের সময় শাহমুখদুম কলেজের কাছে গুলিবিদ্ধ হয়ে সাকিব আঞ্জুমকে দুইবার গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত সাকিবের বাড়ি নগরীর রাণীনগর এলাকায় এবং সে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র ছিল।
এ ঘটনার পর শাকিবের মৃত্যু রাজশাহীর রাজনৈতিক পরিবেশে শোকের ছায়া নেমে আসে এবং এ ধরনের সহিংসতার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নগর কর্তৃপক্ষ ও রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে চাপ সৃষ্টি হয়। সাকিবের পরিবার ও সমর্থকরা বিচার দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।