প্রযুক্তিসর্বশেষ খবর

Apple iPhone 16: ইন্দোনেশিয়ায় নিষিদ্ধ হলো যে কারণে

ইন্দোনেশিয়ায় Apple iPhone 16 বিক্রি নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি জগতে ব্যাপক আলোচিত একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার সরকার স্থানীয় বিনিয়োগের নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় আইফোন ১৬ বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়। এই পদক্ষেপটি শুধু স্থানীয় বাজারেই প্রভাব ফেলেছে, তবে Apple iPhone 16 এর ব্যবহার একেবারেই নিষিদ্ধ হয়নি। যারা ভ্রমণের সময় ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ডিভাইসটি নিয়ে যেতে চান, তাদের ক্ষেত্রে কিছু শর্তাধীন অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এই আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে কেন এবং কীভাবে ইন্দোনেশিয়ায় আইফোন ১৬ এর বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কী পরিস্থিতিতে ডিভাইসটি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা যাবে।

Read More: Xiaomi 15  এবং Xiaomi 15 pro : উন্মোচন হবে চলতি সপ্তাহে

ইন্দোনেশিয়ায় আইফোন ১৬ (Apple iPhone 16) নিষিদ্ধের কারণ

ইন্দোনেশিয়ায় আইফোন ১৬

ইন্দোনেশিয়ার অনলাইন সংবাদমাধ্যম জাকার্তা গ্লোবের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশটির সরকার ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে কোম্পানিটির বিনিয়োগ না বাড়ানোয় Apple iPhone 16 বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইন্দোনেশিয়ার শিল্প মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফেব্রি হেন্দ্রি অ্যান্টনি আরিফ এ নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বলেন, দেশটিতে যারা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য আইফোন ১৬ নিয়ে আসবেন, তাদের কর পরিশোধ করে তা বৈধভাবে ব্যবহার করা যাবে। তবে বিক্রির উদ্দেশ্যে আনলে তা অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।

বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের শর্ত

ইন্দোনেশিয়ার আইন অনুযায়ী, দেশটির বাজারে ব্যবসা করতে হলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করতে হয়। Apple iPhone 16 বাজারজাত করতে হলে অ্যাপলকে ১.৭১ ট্রিলিয়ন রুপিয়া বিনিয়োগ করতে হবে। তবে অ্যাপল এই লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি; এখন পর্যন্ত তারা ১.৪৮ ট্রিলিয়ন রুপিয়া বিনিয়োগ করেছে। স্থানীয় বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করার জন্য ইন্দোনেশিয়া এই শর্তগুলো আরোপ করেছে। স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য এটি একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছে দেশটির সরকার।

ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়মকানুন

এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তিগতভাবে ইন্দোনেশিয়ায় Apple iPhone 16 ব্যবহার করার জন্য কিছু নিয়ম প্রযোজ্য। জাকার্তা গ্লোবের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা সর্বোচ্চ দুটি ডিভাইস আনতে পারবেন, তবে তা বিক্রয়ের জন্য নয়। ইন্দোনেশিয়ার কাস্টমস বিভাগ ব্যক্তিগত ব্যাগেজে আনা ডিভাইসগুলো পরীক্ষা করে এবং কর নির্ধারণ করে। ইন্দোনেশিয়ায় মোট ৯ হাজারটি Apple iPhone 16 প্রবেশ করেছে যা ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে আইফোন ১৬ আনার নিয়ম

ইন্দোনেশিয়ার সরকার কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের জন্য আইফোন ১৬ আনার অনুমতি দিয়েছে, যা শুধু ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য বৈধ। এ প্রক্রিয়ায় ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় বিনিয়োগের শর্ত প্রযোজ্য হয় না এবং তাই সরকার এ ক্ষেত্রে উদারনীতি গ্রহণ করেছে। তবে আইফোন ১৬ ডিভাইসটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠানো হলেও এটি পুনরায় বিক্রয়ের জন্য নয়।

Read More: Royal Enfield: প্রথম বৈদ্যুতিক বাইকটি কেমন?

অ্যাপলের বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি

অ্যাপল ইন্দোনেশিয়ার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতা প্রকাশ করেছে এবং জানিয়েছে যে তারা যত দ্রুত সম্ভব আইফোন ১৬ সহ অন্যান্য পণ্য দেশের বাজারে আনতে চায়। অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সাথে সাক্ষাৎ করে স্থানীয় উৎপাদনকেন্দ্র স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন, যা দেশটির প্রযুক্তি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় উৎপাদন নীতিমালা এবং এর প্রভাব

ইন্দোনেশিয়া দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় উৎপাদন নীতিমালার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। এ নীতিমালার কারণে দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভালোভাবে বিকশিত হচ্ছে এবং স্থানীয় শ্রমশক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্থানীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটানো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বৈদেশিক মুদ্রা সঞ্চিত করার লক্ষ্যে দেশটি আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে বিনিয়োগে উৎসাহিত করছে। অ্যাপলের বিনিয়োগ শর্ত পূরণ না হওয়ায় আইফোন ১৬ বিক্রি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তকে একটি অর্থনৈতিক কৌশল হিসেবে দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে প্রভাব

iPhone 16 এর মতো একটি জনপ্রিয় ডিভাইসের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ইন্দোনেশিয়ার বাজারেই প্রভাব ফেলেছে, তবে এটি আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারেও একটি বড় ইস্যু। এমন সিদ্ধান্তের কারণে ইন্দোনেশিয়ার ক্রেতারা ডিভাইসটির জন্য অন্য দেশে যেতে বা বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে বাধ্য হতে পারেন। অন্যদিকে অ্যাপলের জন্যও এটি একটি বড় ক্ষতি, কারণ ইন্দোনেশিয়া এশিয়ার একটি প্রধান বাজার হিসেবে বিবেচিত।

Read More: Bajaj Pulsar N125 | নতুন ডিজাইনে ১২৫ সিসির Pulsar আনল বাজাজ

অ্যাপলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং ইন্দোনেশিয়ার বাজারে ফিরে আসার সম্ভাবনা

অ্যাপল ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়ার বিনিয়োগের শর্ত পূরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারা ঘোষণা করেছে যে ইন্দোনেশিয়ায় বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি বিশেষ টিম কাজ করছে। টিম কুকের সাথে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের বৈঠক ইঙ্গিত দেয় যে অ্যাপল দেশটিতে তাদের উৎপাদন কেন্দ্র তৈরি করার বিষয়ে আগ্রহী। যদি তারা এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়, তবে ইন্দোনেশিয়ার প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন ও স্থানীয় ক্রেতাদের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি হবে।

উপসংহার

ইন্দোনেশিয়ায় iPhone 16 বিক্রি নিষিদ্ধ করার ঘটনা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। দেশের অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও স্থানীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়। তবে অ্যাপল ইন্দোনেশিয়ার প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এবং দ্রুত বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে ডিভাইসটির বৈধ বাজার নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।

Ajker News BD

আমরা প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা, বিনোদন, প্রযুক্তি এবং জীবনযাত্রার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত সংবাদ পরিবেশন করে। আজকের নিউজ বিডি তার দ্রুত আপডেট এবং নির্ভরযোগ্য সংবাদ সরবরাহের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা পাঠকদেরকে সবসময় সঠিক এবং সময়োপযোগী তথ্য প্রদান করে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button